Sunday, September 25, 2022

লালাখাল





    লালাখাল (Lalakhal) সিলেট শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। 

    লালাখাল এর তামাবিল রোডের কাছে সারি নদী। এই খালের সবচেয়ে আকর্ষণীয় যে বিষয় তা হচ্ছে বিভিন্ন কালারের পানি। খালের একেক অংশে একেক ধরনের কালার। যেমন নীল, সবুজ ও স্বচ্ছ পানি। সারি নদীর স্বচ্ছ জলরাশির উপর দিয়ে নৌকা অথবা স্পীডবোটে করে আপনি যেতে পারেন লালাখালে। ৪৫ মিনিট যাত্রা শেষে আপনি পৌঁছে যাবেন লালাখাল চা বাগানের ফ্যাক্টরি ঘাটে। এসময় মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবেন নদীর পানির দিকে। কি সুন্দর নীল, একদম নিচে দেখা যায়। 

    লালাখাল যাওয়ার উপযুক্ত সময়

    লালাখাল বেড়ানোর উপযুক্ত সময় শীতকাল। শীতের সময়টায় আপনি পাবেন চমৎকার নীল জলরাশি। বর্ষার স্রোত থাকে না তখন। তাই পানি শান্ত, স্বচ্ছ। একেবারে যেন নদীর তলদেশ দেখা যায় উপর থেকে। ভাবা যায় না যে পানি এত স্বচ্ছ হতে পারে! বর্ষায় স্রোতের সময় পানির রং হারিয়ে যায়। শীতের সময় বোনাস হিসেবে দেখতে পাবেন হরেক রকম শীতের পাখি।

    কিভাবে যাবেন

    লালাখালে যেতে হলে সিলেটের শিশু পার্কের সামনে থেকে লেগুনা অথবা জাফলংয়ের বাসে চেপে সিলেট-তামাবিল সড়ক ধরে যেতে হবে সারিঘাট। সিলেট আর জাফলং মাঝামাঝি এ স্থানটির নাম সারিঘাট। আগেই বলা হয়েছে, যাওয়ার জন্য পথ দুটি সড়কপথ ও নৌপথ। সড়ক পথে যেতে চাইলে মাইক্রোবাস বা কার ভাড়া নিলে ভালো হয়। তা ছাড়া সিলেট শহর থেকে বাস, লেগুনায় সারিঘাট গিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া নিতে পারেন। নৌপথে যেতে চাইলে আগে সারিঘাট পর্যন্ত একই নিয়মে বাস, লেগুনায় গিয়ে নৌযান ভাড়া নিতে হবে। ফেরার পথে এখান থেকে বাসে কিংবা লেগুনায় আসতে পারবেন। রাত ৮টা নাগাদ যানবাহন পাওয়া যাবে।

    কোথায় থাকবেন

    আপনি চাইলে পারবেন লালাখাল এর পাড়ে রাত কাটাতে। নর্দার্ন রিসোর্ট নামে রিসোর্টটির নিজেদের পরিবহন ব্যবস্থাও আছে।

    আরেকটি আবাসন ব্যবস্থা হলো নাজিমগড় রিসোর্ট (Nazimgarh Resorts) যা লালাখাল এর খুব কাছে খাদিমনগরে অবস্থিত। আগে থেকে যোগাযোগ করে যাওয়া ভাল। নাহলে রিসোর্টে রুম নাও মিলতে পারে। নাজিমগড় রিসোর্টে থাকার জন্য আছে তিন ধরনের ব্যবস্থা। আছে বিশাল টেরেস, ছোট ছোট বাংলো ও বড় ভিলা। একেকটির ভাড়া একেক রকম, তবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় পাঁচতারা হোটেলের সমান। আছে স্পা ও পুল, যেখানে দূর করতে পারেন শরীরের অবসাদ। সবচেয়ে বড় কথা প্রতিটি স্থাপনাই গাছপালা-জঙ্গলে ছাওয়া টিলার ধারে। ভিলা, টেরেস বা বাংলোর বারান্দায় বসে হাত বাড়ালেই যেন পাওয়া যায় গাছগাছালির ছোঁয়া। সাধারণ হোটেল-কটেজের চেয়ে নাজিমগড়ে থাকার খরচটা একটু বেশিই মনে হবে। এক রাতের জন্য সবচেয়ে কমদামি ‘প্রিমিয়ার’ কক্ষের ভাড়া পড়বে প্রায় ৭ হাজার টাকা, আর প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুইটের ভাড়া প্রায় ১৫ হাজার। এক কক্ষে থাকতে পারবেন সর্বোচ্চ ৩ জন, তবে ৮ বছরের নিচের শিশুর জন্য ভাড়া লাগবে না। এ ভাড়ার মধ্যে পাবেন দুজনের সকালের নাশতা।

    এ ছাড়া সিলেট শহরে রাত যাপন করে একদিনে মাত্র লালাখাল ঘুরতে পারেন। অথবা বিছনাকান্দি ও জাফলং যেকোনো একটার সঙ্গে মিলিয়ে বিকেলের ভ্রমণটা লালাখালে হতে পারে। সিলেট শহর থেকে বেশ দূর হওয়ায় সন্ধ্যার দিকে নদীতে কোনো নৌকা থাকে না। তাই ভ্রমণ বা ঘোরাঘুরি সন্ধ্যার মধ্যেই শেষ করতে হয়। সবচেয়ে ভালো হয় নৌকা ভাড়া নিয়ে যাতায়াত করলে।

    খরচ

    সিলেট শহর থেকে শুধু লালাখালের জন্য মাইক্রোর ভাড়া দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকার মধ্যে হবে, গাড়ি নিলে ভাড়া এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে। সারা দিনের প্ল্যান হলে ভোরে সিলেট থেকে রওনা দিতে হবে। তা ছাড়া বাস কিংবা লেগুনায় ৪০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে সারিঘাট যেতে পারবেন। সেখানে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া ৮০০ থেকে এক হাজার ৫০০ টাকা আর স্পিডবোটে যেতে চাইলে ভাড়া এক হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা হতে পারে। নৌযানে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে, ভাড়া একই।



    শেয়ার করুন

    Author:

    Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

    0 coment rios: