এমএস সজীব: সুবলপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম নামে এক ফেরিওয়ালার বাড়িতে ঢুকে মোবাইল ও মালামাল লুট করেছে দূর্বত্তরা। বৃহস্পতিবার ভোর ৩:৩০ মিনিটের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এসময় রবিউল ইসলামের ঘুম ভেঙে গেলে চিৎকার করলে তাকে কুপিয়ে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আহত রবিউল ইসলামকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী রেফার করেন।
আহত রবিউল ইসলাম (৪০) দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের সুবলপুর গ্রামের মাঝেরপাড়ার জুড়ো মল্লিকের ছেলে। তিনি গ্রাম-গঞ্জে ফেরি করে চানাচুর, বাদাম ও নারীদের কসমেটিকস সামগ্রী বিক্রি করেন জীবিকা নির্বাহ করেন। এ ঘটনার পর দুপুরে রবিউলের বাড়ির অদূরে একটি গর্তের মধ্যে লুট করা মোবাইল মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে, খবর পেয়ে গতকাল সকালে কার্পাসডাঙ্গা ক্যাম্প পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক আতিকুর রহমান জুয়েল সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ২৪ ঘন্টা পার হলেও ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে পারিনি এবং জড়িতদের কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি। আহত পরিবারের সদস্যরা রাজশাহী থাকায় এখনো কোন মামলা বা অভিযোগ করেনি থানায়। তবে পুলিশ নিজ উদ্যোগে বিষয়টি তদন্তে মাঠে নেমেছে।
আহত রবিউল ইসলামের স্ত্রী কল্পনা খাতুন বলেন, রাতে আমি ও আমার মেয়ে ঘরের মধ্যে এবং স্বামী ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলো। রাত সাড়ে ৩টার দিকে চিৎকারে ঘুম ভেঙে বাইরে বের হয়ে দেখি আমার স্বামীর ঘাড় থেকে রক্ত পড়ছে। এসময় ৫-৬ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি ঘর থেকে মোবাইল ও একটি কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে যায়। ওই ব্যাগে কোন টাকা না থাকলেও কাপড়সহ মালামাল ছিলো। পরে প্রতিবেশীদের সহযোগীতায় আমার স্বামীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। তিনি আরও বলেন, কিছুদিন পূর্বে এনজিও থেকে টাকা উত্তোলন করি। ওই লোনের কিছু টাকা ঘরে ছিলো। তবে এই টাকা তারা নিতে পারেনি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আনিক চৌধুরী দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, রবিউলের ঘাড়ে ধারালো অস্ত্রের কোপ লেগেছে। রক্তক্ষরণের কারণে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। এদিকে গতকাল সকাল ৯ টার দিকে পরিবারের সদস্যরা আহত রবিউল ইসলামকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রাজশাহীর উদ্দেশ্য চুয়াডাঙ্গা ত্যাগ করেন।
রবিউলের স্ত্রী কল্পনা খাতুন বলেন, দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌছালেও রাত ৮ টা পর্যন্ত রক্তের অভাবে চিকিৎসা শুরু হয়নি। ৯টার পর রক্ত সংগ্রহ হলে চিকিৎসক আমার স্বামীর অস্ত্রপাচার শুরু করেন। তিনি শঙ্কামুক্ত আছেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসক।
দামুড়হুদা মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, প্রাথমিক ধারণা এটা চুরির ঘটনা হতে পারে। দূর্বত্তরা মালামাল নেয়ার সময় রবিউলের ঘুম ভেঙে গেলে তার ঘাড়ে কোপ দিয়ে পালিয়ে যায়। সকালে একটি হেঁসো, লুট হওয়া মোবাইলসহ মালামাল উদ্ধার করা হয়। ঘটনার রহস্য উন্মোচনে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি আরও বলেন, আহতের চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যরা রাজশাহী থাকায় এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ হয়নি। আজ মামলা বা অভিযোগ হতে পারে।