শ্রদ্ধেয় বিমানবাবু,
কাল সন্ধ্যায় আবারও আপনাকে TV-র পর্দায় দেখলাম প্রাইমটাইম-এ আপনার কমেন্ট্স দিচ্ছেন মঙ্গলকোটের 'অমঙ্গল' কান্ড নিয়ে। আপনি আপনার চিরাচরিত বিচক্ষন শব্দচয়নের মাধ্যমে জানালেন আপনার তীব্র নিন্দা, উক্ত ঘটনার প্রতি। কংগ্রেসি বিধায়ক এবং দলনেতাদের প্রতি আপনার ব্যক্ত উদ্বেগ খুবই সমিচিন এবং সদর্থক। এখানেই না থেমে আপনি কড়া ধমক দিয়েছেন আপনার নিজের পার্টীকর্মিদের এবং অতি দ্রূতভাবে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থাও করেছেন। মার্ক্সবাদী কম্যুনিস্ট পার্টীর রাজ্য সম্পাদকের পদে আপনার এই ক বছরে উপরুক্ত নিন্দা প্রকাশের কাজে আপনি অতুলনিয় পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। বিভিন্ন জায়গায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনার পরে আপনার পরিস্থিতির প্রতি কড়া নজর রাখার আশ্বাসও বাংলার মানুষের কাছে অপরিচিত নয়। তবে যেটা অভূতপূর্ব এবং অপরিচিত সেটা হল দ্রুত এবং দৃঢ পদক্ষেপ নেওয়া। বিগত কয়েক বছরে হিংসাচারের ঘটনা বিরল নয় এটা অনস্বীকার্য তবে এ হেন ক্ষেত্রে, অর্থাৎ যার পরে আপনি এত শীঘ্র এত দৃঢ় পদক্ষেপ নিলেন, তাতে এই ঘটনা নিশ্চয় বিরল!
মানসবাবু তথা বাকি "আক্রান্ত" কংগ্রেসি দলের নেতারা নিশ্চয়ই খুব ভাগ্যবান যে তাঁরা এক বিরল পুরষ্কারের পাত্র হলেন এই মঙ্গলকোটের ঘটনায়। পুরষ্কারটি হল আপনার দ্রুত এবং দৃঢ় পদক্ষেপ যা কয়েকশ হতভাগা মার্ক্সবাদি কর্মিদের নাগালের বাইরে। যদিও বা তাঁরা সিঙ্গুর নন্দিগ্রাম লালগড় তথা বাকি জায়গায় আপনার এবং বাকি নেতৃবৃন্দের দেওয়া ডাককেই রুপায়িত করতে গিয়েই প্রান হারাচ্ছেন, তাও তাঁরা এত সৌভাগ্যের অধিকারি নয়। দলিয় মুখপাত্রের এক লাইন হওয়ার সৌভাগ্য তাদের হলেও তাঁরা বা তাদের আত্মিয় পরিজনেরা আপনার দ্রুত এবং দৃঢ় পদক্ষেপের প্রার্থি নয়। বোধ হয় পার্টী নেতৃত্ত্বে আর বিশ্বাস না থাকায় মাঠেঘাটের পার্টীকর্মিরা নিজেরাই পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তবে আপানার কড়া বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে পার্টী এবং তার কর্মিদের আপনি অকাতরভাবে আরও সংশোধনের দিকে নিয়ে জেতে ইচ্ছুক। মনে পড়ে ছেলেবেলায় মামার বাড়িতে রক্ষেকালি পুজোর সময়ে বলি হওয়ার আগে মন্দিরের অনতিদুরে বাঁধা পাঁঠকে দেখে কাঁদছিলাম বলে আমার এক মামা আমায় বলেছিলেন "ওরে বোকা ও তো এক বড় কাজের জন্য মরছে আর তাতে তুই কাঁদছিস্? ছিঃ ছিঃ কি বোকা রে তুই!" বুঝতে পারছি আজও সেই বোকাটা রয়ে গেলুম।
ইতি
এক জনৈক হতভাগা